চাকরীর বাজার সবসময়ই কড়া। দুই জন লোকের vacancy থাকলে সেখানে CV জমা পরে কয়েকশ। ইন্টারভিউ ফেস করে মিনিমাম ১০ জন। অনেক সময় যোগ্যতা থাকা সত্বেও দেখা যায় Interview Board এ নিজেকে পরিপূর্নভাবে present না করার কারনে সম্ভাবনাময় চাকুরী ও হয় না। তাই Interview Board নিজেকে দক্ষতার সাথে present করাই হল সবচেয়ে বড় ব্যাপার।
তাহলে চলুন Interview Board এর কমন কিছু বিষয় নিয়ে কথা বলা যাক
১। প্রয়োজনীয় ডকুমেন্ট সাথে নিয়ে যাওয়াঃ Interview ডাক পাবার পর আপনার প্রথমে যে বিষয় টি খেয়াল করতে হবে সেটা হল আপনার প্রয়োজনীয় ডকুমেন্ট অথ্যাৎ আপনার যেসব ডকুমেন্ট সাথে নিয়ে যেতে হবে । এর মধ্যে যেসব কাগজপত্র সত্যায়িত করার দরকার সেগুলা আগে থেকেই রেডি করে নিতে হবে। অবশ্যই আপনার সিভি বা রিজিউমি প্রিন্ট করে নিয়ে যেতে ভুলবেন না সেই সাথে নিজের সদ্য তোলা পাসপোর্ট ছবি । অন্তত একটা কলম সাথে রাখা জরুরি।
২। পোশাকঃ ফর্মাল ড্রেস সবসময়ই ইন্টারভিউর জন্য পারফেক্ট। খুব সুন্দর করে পরিপাটি হয়ে যাবেন। সুন্দর গেটআপ আপনার কনফিডেন্টও বাড়িয়ে দেয়। কড়া বডিস্প্রে মাখবেন না কারণ এটা বিরক্তিকর। মুখে দাঁড়ি থাকলে সুন্দর করে সাজাবেন। ক্লিন শেভ করতে না পারলে অন্তত কর্পোরেট একটা লুক যেন থাকে চেহারায়। ইসলামী লেবাস থাকলে দাঁড়ি সেভাবেই মেইন্টেইন করা উচিত। মেয়েদের ক্ষেত্রে একই কথা ফর্মাল ড্রেস পড়তে হবে। সেক্ষেত্রে শাড়ী বা থ্রীপিস যেটাই হোক। তবে চকচকে জমকালো পোশাক থেকে বিরত থাকবেন আর রঙের দিকটাও নজর রাখবেন। সাজগোজের বিষয়টাও মাথায় রাখবেন যেন খুব বেশি আরটিফিশিয়াল না লাগে।
৩। পারফেক্ট উত্তর দিনঃ Interview Board বোর্ডরা যে সকল প্রশ্ন করবে সেগুলো বুঝে উত্তর দিবেন। উত্তর গুছিয়ে সুন্দর ভাবে উপস্থাপন করবেন। এলোমেলো বা অবান্তর কথাবলা থেকে বিরত থাকবেন। ভুলভাল ইংলিশ উচ্চারণ করবেন না। ইংলিশে প্রশ্ন করলে সেটা ইংলিশেই উত্তর দিবেন। না পারলে অনুমতি নিয়ে বাংলায় উত্তর করবেন। ভুলেও কোনও উত্তরকে জটিল করে তুলবেন না। সহজ সরল ভাষায় কথা বলবেন।
৪। পজিটিভ বডিল্যাঙ্গুয়েজঃ Interview Board কনফিডেন্ট থাকবেন। কোনও প্রশ্ন না পারলেও খুব বেশি ঘাবড়ে যাবেন না। মিথ্যা বলে বিপদে পড়ার চেয়ে কিছু না বুঝলে সুন্দর করে জিজ্ঞেস করুণ। হাত পা নাচাবেন না। যেই চেয়ারে বসে কথা বলবেন অহেতুক সেটায় দুলবেন না। এগুলা বাজে এচিটিউড।
৫। জব এবং কোম্পানি সম্পর্কে প্রপার হোমওয়ার্কঃ যে কোম্পানিতে ইন্টারভিউ দিতে গিয়েছেন সেখানকার যাবতীয় ইনফরমেশন বিশেষ করে তাদের প্রডাক্ট, সার্ভিস, ক্লাইন্ট, প্রজেক্টস, মার্কেটে তাদের উপস্থিতি এসব স্টাডি করে যাবেন। কোম্পানির ব্যাপারে আপনি যত বেশি জানবেন ততই বেশি মনোযোগ আকর্ষণ করতে পারবেন ইন্টারভিউ বোর্ডের মেম্বারদের। যেই পজিশনের জন্য এপ্লাই করেছেন সেই পজিশনের রিকুয়ারমেন্টস এবং রেস্পন্সিবিলিটিস গুলো খুব ভালো করে জেনে যাবেন যেন আপনি কেন তাদের কোম্পানির জন্য এই পজিশনে বেষ্ট ফিট সেটা তাদেরকে ফিল করাতে পারেন।
৬। বিরক্ত হবেনা, বিরক্ত করবেন নাঃ বোর্ডারদের কোনও কথায় বিরক্ত হওয়া যাবেনা। তারা যা বলেন আগে মন দিয়ে শুনতে হবে এরপর সেটার রিপ্লাই করতে হবে। উনারা আপনার টলারেন্স লেভেল যাচাই করতে পারেন, আপনাকে হাইপার করে এক্সপেরিমেন্ট করতে পারেন। সো এগুলা মাথায় রাখতে হবে। সেই সাথে আপনার কোনও কথায় যেন উনারাও বিরক্ত না হয় সেটা খেয়াল রাখবেন।
৭। স্যালারির বিষয় স্মার্টলি হ্যান্ডেল করাঃ অধিকাংশ কোম্পানিই জব পোষ্টে তাদের স্যালারি উল্লেখ করে দেয়। তারপরও ইন্টারভিউ বোর্ডে আপনার এক্সপেক্টেড স্যালারির ব্যাপারে জানতে হতে পারে। তখন ব্যাপারটা বেশ স্মার্টলি হ্যান্ডেল করতে হবে। বেশির ভাগ ক্ষেত্রেই কোম্পানির ওই পজিশনের জন্য বেষ্ট ডিজায়ারড স্যালারিতে জয়েন করার ব্যাপারে আশ্বাস দিলে ভালো ইম্প্রেশন ক্রিয়েট হয়।
৮। কিছু প্ল্যান নিয়ে যাওয়াঃ যেই পজিশনের জন্য ইন্টারভিউ দিচ্ছেন সেখানে যেই দায়িত্ব পালন করা হতে পারে সেটাকে আরও ইফেক্টিভ করার জন্য আপনি আগে থেকেই কিছু রাফ প্ল্যান বা আইডিয়া বানিয়ে নিয়ে যেতে পারেন। যেন এগুলা আপনি বোর্ডের সামনে উপস্থাপন করলে উনারা বুঝতে পারে আপনি বেশ সিনসিয়ার এবং কাজের প্রতি ডেডিকেটেড। এটা আপনাকে বাকিদের থেকে একদমি আলাদা করে তুলবে। চাইলে কিছু রিসার্চ করে নিয়ে যেতে পারেন দেখানোর জন্য।
উপরে বিষয়গুলো দিকে একটু নজর দিলে খুব ভালোভাবে একটা Interview Board face করা যায়। তাই বুদ্ধিমত্তার সাথে Interview Board নিজের পরিচয় তুলে ধরুন।